স্টাফ রিপোর্টার :
ডলার সংকটের কারণে দেশের অর্থনীতিতে দেখা দিচ্ছে মন্থরগতি। এর প্রভাবে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র বা এলসি খোলা কমছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলা কমেছে প্রায় ৪৮ (৪৭ দশমিক ৮০ শতাংশ) শতাংশ। সবচেয়ে বেশি কমেছে ভোজ্যতেল আমদানি ঋণপত্র। এছাড়া শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, মধ্যবর্তী পণ্য এবং জ্বালানি তেলের এলসি খোলা ও নিষ্পত্তিও আগের চেয়ে নিম্নমুখী।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বিভিন্ন পণ্যের এলসি খোলা হয়েছে এক হাজার ৫৮৯ কোটি ডলারের। যা গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই (প্রথম তিন মাস) সময়ের চেয়ে ৩৪৫ কোটি ডলার বা ২৫ দশমিক ৪০ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে বিভিন্ন পণ্যের এলসি খোলার পরিমাণ ছিল এক হাজার ৯৩৮ কোটি ডলার।
সাম্প্রতিক ডলার সংকটের প্রভাবে এলসি খোলা কমার পাশাপাশি পুরনো এলসির দায় পরিশোধও কমেছে। আলোচিত তিন মাসে আগের এলসি নিষ্পত্তি কমেছে প্রায় ২৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে এলসি নিষ্পত্তি কমেছিল ১৮ শতাংশ।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ভোগ্যপণ্যের আমদানি ঋণপত্র খোলা হয়েছে ১৪২ কোটি ডলারের। ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২৭২ কোটি ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ভোগ্যপণ্যে আমদানি ঋণপত্র খোলা কমেছে ৪৭ দশমিক ৮০ শতাংশ আর ভোগ্যপণ্যের ঋণপত্রে নিষ্পত্তি কমেছে ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ।
আলোচিত সময়ে ভোগ্যপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এলসি খোলা কমেছে অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের। তিন মাসে অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের আমদানি ঋণপত্র খোলা কমেছে ৮৭ দশমিক ৪০ শতাংশ আর এলসি নিষ্পত্তি কমেছে ৭২ দশমিক ৭১ শতাংশ।
একই চিত্র পরিশোধিত ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রেও। চলতি অর্থবছরের তিন মাসে পরিশোধিত ভোজ্যতেলের ঋণপত্র খোলা কমেছে ৬৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ভোজ্যতেলের ঋণপত্র নিষ্পত্তি কমেছে ৫৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। খাদ্য আমদানিতে চাল ও গম আমদানির ক্ষেত্রে কমেছে ৬৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ডাল আমদানিতে ৪১ শতাংশ, ওষুধ ও ওষুধজাত দ্রব্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলা কমেছে ৩৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরজুড়ে এলসি খোলা ও নিষ্পত্তির হার ছিল নিম্নমুখী। গত অর্থবছরে নানা পণ্যের মোট এলসি খোলা হয়েছিল ৬ হাজার ৯৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের। এটি আগের ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২৬ দশমিক ৪১ শতাংশ কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্যের এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৪২৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্যের এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ২১৯ কোটি ডলার। যা ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ কম। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্যের আমদানি ব্যয় বেড়েছিল প্রায় ৩৬ শতাংশ আর আমদানির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ২৪৯ কোটি ডলার।