ন্যাশনাল ডেস্ক :
কয়েক বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে অসময়ের ঝড় ও বৃষ্টিতে তরমুজ চাষে লোকসান গুনতেন ভোলার কৃষকেরা। এবার সেই লোকসান থেকে বাঁচতে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শতাধিক কৃষক। খরচের তুলনায় লাভ প্রায় তিনগুণ। তাদের সফলতা দেখে অন্যরা আগ্রহী হচ্ছেন এ পদ্ধতির তরমুজ চাষে।
সরেজমিনে জানা যায়, অসময়ে বন্যা, বৃষ্টি বা ঝড়ে ক্ষেতের তরমুজ পানিতে তলিয়ে যেত। তাই মালচিং পদ্ধতিতে বেবি বা অফ সিজন তরমুজ চাষ করছেন কৃষকেরা। ফলে জমি উঁচু হওয়ায় বন্যার পানি তরমুজকে ছুঁতে পারে না। পাশাপাশি ক্ষেতে পোকামাকড় ও আগাছার বালাই থাকে না। মাত্র ৪০-৫০ দিনেই ফলনও হয় ব্যাপক।
সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চরকালি গ্রামের কৃষক মো. আবদুর রহিম জানান, আগে সনাতন পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করতেন। এতে ব্যাপক লোকসান হতো। এ বছর মালচিং পদ্ধতিতে ২৫ শতাংশ জমিতে বেবি বা অফ সিজন তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি এতে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। বাজারে এ জাতের তরমুজের চাহিদা ও দাম বেশি। আগামীতে আরও জমিতে এ জাতের তরমুজ চাষের পরিকল্পনা আছে তার।
মনপুরা উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর প্রথমবারের মতো ৩৩ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে বেবি তরমুজ চাষ করেছেন। এ পদ্ধতিতে কোনো ক্ষতি ছাড়াই সফল হয়েছেন। ৩৩ হাজার টাকা খরচ করে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন।
সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. হোসেন, মো. নূরন্নবী ও আনোয়ার হোসেন জানান, মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন আবদুর রহিম। এটি শুনে তারা তার কাছে পরামর্শ নিয়েছেন। আগামীতে এ জাতের তরমুজ চাষ করবেন। এ পদ্ধতিতে যদি সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হয় তাহলে তরমুজ চাষে বিপ্লব ঘটাতে পারবেন তারা।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসূল কবীর জানান, মালচিং পদ্ধতিতে কৃষকদের সফলতা দেখে অনেক কৃষক আগ্রহী হচ্ছেন। এতে জেলায় বাড়বে বেবি তরমুজের চাষ। এ বছর ভোলায় ২০ হেক্টর জমিতে ৬০ জন মালচিং পদ্ধতিতে বেবি বা অফ সিজন তরমুজ চাষ করেছেন।