শফিউল্লাহ সুমন :
বাংলাদেশে দু’টি নতুন বিদেশী এয়ারলাইন্স মে মাসে তাদের কার্যক্রম শুরু করবে। বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (ক্যাব) এই লক্ষ্যে আগামী মে মাস থেকে এদেশে নতুন এদুটি বিদেশী এয়ারলাইন্স- ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স এবং এয়ার চায়না’র ফ্লাইট পরিচালনার সুবিধার্থে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ক্যাব চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান জানান, “বাংলাদেশকে একটি এভিয়েশন হাবে পরিণত করার যে লক্ষ্য রয়েছে, তার অংশ হিসেবে আমরা আগামী মাস থেকে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স এবং এয়ার চায়না’র ফ্লাইট পরিচালনার সুবিধার্থে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছি।” ইতোমধ্যে ক্যাব এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে এবং নতুন দুটি এয়ারলাইন্সের জন্য গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং পরিষেবা সহজতর করতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে জানিয়েছে।
ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সও আগামী মাস থেকে আদ্দিস আবাবা এবং ঢাকার মধ্যে ফ্লাইট শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছে এবং চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এয়ারলাইন্স এয়ার চায়না প্রথমবারের মতো সরাসরি বেইজিং-ঢাকা-বেইজিং ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে।
রিদম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) সোহাগ হোসেন বলেন, “আমরা মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আদ্দিস আবাবা-ঢাকা-আদ্দিস আবাবা সরাসরি ফ্লাইট শুরু করার বিষয়ে আশাবাদী। প্রাথমিকভাবে এটি সাপ্তাহিক পাঁচটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।” সোহাগ বলেন, রুটটি বাংলাদেশী প্রবাসীদের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাড়ায় বিভিন্ন সংযোগকারী ফ্লাইট অফার করবে, কারণ এই এয়ারলাইন্স আফ্রিকার বৃহত্তম নেটওয়াকর্, যা আদ্দিস আবাবা থেকে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার সমস্ত বড় শহরকে সংযুক্ত করে।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১০টি গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনাকারী ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরুর পর, বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭ দিয়ে ঢাকায় প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।
দুই দেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় একের পর এক আলোচনার পর, গত ৬ ডিসেম্বর সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ইথিওপিয়া ও বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এয়ার সার্ভিস চুক্তি স্বাক্ষর করে।
ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনন্স ১৪৭টি বিমানসহ, যাত্রী বহন, গন্তব্য, বহরের আকার এবং আয়ের দিক থেকে এ ধরনের পরিষেবা দেয়া দেশগুলোর তালিকায় বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম এয়ারলাইন হিসাবে স্থান পেয়েছে। অন্যদিকে, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে জনগণের যোগাযোগ বৃদ্ধির প্রবণতা বিবেচনায় এয়ার চায়না ঢাকা-বেইজিং-ঢাকা রুটে সাপ্তাহিক দুটি ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বর্তমানে চীনের দুটি শহর- কুনমিং এবং গুয়াংজুর সাথে ঢাকার সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। এ কারণে উভয় দেশের সরকারী প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী এবং পরামর্শদাতারা চীনের অন্যান্য শহরের মাধ্যমে একে অপরের রাজধানীতে পৌঁছাতে বাধ্য হচ্ছে। এয়ার চায়না জানিয়েছে, তারা ঢাকা রুটে ১১২টি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক রুট সহ মোট ৪৫২টি রুটে চলাচল করবে।
উল্লেখ্য, এয়ার চায়নার বহরে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ৩১৯, এ৩১৯নিও, এ৩২০, এ৩২০নিও, এ৩২১, এ৩২১নিও, এ৩৩০, এ৩৫০ এয়ারবাস এবং বোয়িং বি৭৩৭, বি৭৩৭ এমএএক্স ৮, বি৭৪৭, বি৭৭৭ এবং বি৭৮৭ সহ ৪৯৭টি বিমান যুক্ত ছিল।
সূত্র : বাসস
sumonpress@gmail.com