হেলথ ডেস্ক :
দেশে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার। বিশেষজ্ঞদের মতে অ্যান্টিবায়োটিকের যত বেশি ব্যবহার হবে এর প্রতিরোধও তত বেশি হয়ে উঠবে। তাই এর ব্যবহার কমাতে ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে শুধুমাত্র গত তিন বছরেই পূর্বের তুলনায় এ অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়েছে ৩১ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
রোববার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত পাঠ্যপুস্তকে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স প্রসঙ্গ অন্তর্ভুক্তিকরণ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সম্প্রতি একটি জরিপে দেখা গেছে, ২০১৪ সালে প্রতি ১ হাজার জনে দৈনিক ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ছিল ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ২০১৬ সালে প্রতি ১ হাজার জনে দৈনিক ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়ে দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ। তবে ২০১৭ সালে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার কমে আসে ২১ দশমিক ২৬ শতাংশ। ২০১৮ সালে ২০ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১৯ সালে ২৪ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ২৫ দশমিক ৩৪ শতাংশে এসে পৌঁছায়। তবে ২০২১ সালে প্রতি হাজারে দৈনিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হার এসে দাঁড়ায় ৫২ শতাংশে।
তিনি জানান, প্রতিবছর সারাবিশ্বে ২২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের প্রভাবে মারা যায়। এছাড়া ২০১৯ সালে সারাবিশ্বে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের সঙ্গে সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা ৪৯ লাখ ৫০ হাজার মানুষ। যার মধ্যে ১২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ সরাসরি রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়ার কারণেই মারা গেছে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, শিক্ষা কারিকুলামে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বিষয়ক পাঠ যুক্ত করার জন্য আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষামন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠাবো। কোমলমতি বাচ্চাদের মেন্টাল হেলথে, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, হাইজিন এগুলো চলে আসে। এর পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সও চলে আসে।
তিনি বলেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না, এটা শিশুদের মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে সে সবার আগে পরিবারে শিক্ষাটা প্রচার করবে। তবে এ শিক্ষা যারা নিতে পারবে, তাদের মধ্যেই দিতে হবে। ধীরে ধীরে তাদের শেখাতে হবে। এজন্য আমি মনে করি ক্লাস সিক্স থেকে দিলে ভালো হবে। এর আগে দিলে তারা বুঝতে পারবে না।
মোহাম্মদ ইউসুফ আরও বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক খুবই খারাপ জিনিস। মারাত্মক সমস্যা এবং ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এটা কোনোভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। যদি আমরা কারিকুলামে একটা পরিবর্তন আসতে পারি, তাহলে এ বিষয়ে সফলতা আসবে। এবি ষয়ে যদি আমরা বিনিয়োগ করি, তাহলে ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই সুফল পাবো।